বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডভোকেট

আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য নই বা অন্ধ সমর্থকও নই। রাজনীতির উর্ধ্বে থেকে সব কিছু চিন্তা-ভাবনা ও বিবেচনা করে প্রকৃত সত্য জানার ও প্রকাশের জন্য আমি সব সময় নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করি। সত্য বলাতে ও সত্য লেখাতে আমার শান্তি। সম্মানজনক কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া দেশের প্রায় বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী ও চাকুরীজীবীরা দলীয়করণ হয়ে গেছেন। তাদের বিবেক মন্তক যেন রাজনৈতিক দলের কাছে বন্ধক বা জিম্মী হয়ে আছে। তাদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যথেষ্ট যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও তারা দলীয় প্রধান কি বলেন সেদিকে তাকিয়ে থাকেন। হাজারো অযৌক্তিক কথা বললেও অনুসারীরা তা সমর্থন করে কথা বলতে শুরু করেন। শহরবাসী শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী ও নেতাদের কথাই পত্রিপত্রিকায়, মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। দেশের সাধারণ মানুষের কথা তেমন প্রকাশ হতে দেখা যায় না।

দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় অতিথি কলামে গত ২৪/১২/২০২৩ প্রকাশ হয়েছিল, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম বারের মত ভোট দেওয়ার সুযোগ পাওয়া কয়েক কোটি নতুন ভোটারসহ ভোটারা ভোট দিয়ে সংসদে বিরোধী দলের আসনে কে বসবেন-জাতীয় পার্টি, ঈগল, নাকি ট্রাক তাদের নির্বাচন করবেন। শত উত্তেজনা, হানাহানি, মারামারি, খুনাখুনি করেও অন্য কোন ফলাফল আনার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো ( Something is better than nothing) । নাই গণতন্ত্রের চেয়ে নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র ভালো?

গত ৩১/১২/২০২৩খ্রিঃ তারিখ কক্সবাজারটাইমস.কম অনলাইন পত্রিকায় লিখেছিলাম, টিআইবি নিজের থেকে কোন উদ্ভট তথ্য দেন নাই। প্রার্থীদের হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন মাত্র। হলফনামায় দেওয়া তথ্য মতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী স্বঘোষিত ৫৭১জন কোটিপতি প্রার্থীর মধ্যে যদি ৩০০ জন নির্বাচিত হন তাহলে কি জাতীয় সংসদ কোটিপতিদের ক্লাব হয়ে যাবে?

নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী প্রার্থীদের হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ৫৭.৩৪ শতাংশ প্রার্থীর মূল পেশা ব্যবসা। আইন ও কৃষিকাজকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন যথাক্রমে ৯.১৭ ও ৭.৮১ শতাংশ প্রার্থী। চাকরিজীবী ৫.১৬ শতাংশ ও শিক্ষক ৪.১৫ শতাংশ। অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২.৭১ শতাংশ,চিকিৎসক ২.১৯ শতাংশ, সাংবাদিক ০.৮৩ শতাংশ। রাজনীতিকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন মাত্র ২.৮৬ শতাংশ প্রার্থী।

গত ৭ জানুয়ারী ২০২৪ তারিখ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পত্রিকায় প্রকাশিত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তিন শত আসনের মধ্যে ২৯৮ আসনের ফলাফলে দেখা যায়, নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যে ১৯৯জন ব্যবসায়ী, ২৪জন আইনজীবী, ২৬জন রাজনীতিবিদ ও ১৪জন কৃষিজীবী (পরে ১টি আসনে আওয়ামী লীগের প্রাথী জয়ী হয়েছেন হলফনামায় তার পেশা কি দিয়েছেন তা জানা যায়নি, ১টি আসনের ফলাফল স্থগিত আছে)।

সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের মূল কাজ হলো আইন প্রণয়ন করা। আইন প্রণয়নের কাজে আইনজীবীদের বেশী অংশগ্রহন ও ভুমিকা থাকা প্রত্যাশিত। কোটিপতি ব্যবসায়ীদের প্রচুর অংশগ্রহনের ফলে আইনজীবীদের অংশগ্রহন ও সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যা দিন দিন আশংকাজনকভাবে কমে যাচ্ছে। ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত আইনজীবীর সংখ্যা ছিল ৩১%, ব্যবসায়ীর সংখ্যা ১৮%। ১৯৭৯ সালে আইনজীবী ২৪%,ব্যবসায়ী ২৬%। ১৯৯১ সালে আইনজীবী ১৫%,ব্যবসায়ী ৩৮%। ১৯৯৬ সালে আইনজীবী ১৬%, ব্যবসায়ী ৪২.৫%। ২০০১ সালে আইনজীবী ১২%, ব্যবসায়ী ৫৮%। ২০০৮ সালে আইনজীবী ১৪%,ব্যবসায়ী ৫৭%। ২০১৪ সালে আইনজীবী ১৩%,ব্যবসায়ী ৫৯%। ২০১৮ সালে আইনজীবী ১৪%,ব্যবসায়ী ৬২% এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে আইনজীবী ৮%,ব্যবসায়ী ৬৭% সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

শপথগ্রহনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকারের পথচলা শুরু হয়েছে। নতুন মন্ত্রীসভার ৩৬জনের মধ্যে ১৪জনই ব্যবসায়ী। ৩জন আইনজীবী, ৫জন রাজনীতিবিদ, ২জন সাবেক আমলা, ৩জন সাবেক সেনাকর্মকর্তা, ৪জন শিক্ষক, ২জন বেসরকারী চাকরিজীবী ও ২জন চিকিৎসক (সুত্র ১২জানুয়ারীর আমাদের সময়)।

এই নির্বাচনে অংশগ্রহনকারী পরাজিত প্রার্থী তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার এই নির্বাচনকে ’টোটালি করাপশনের নির্বাচন’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, এই নির্বাচনের পর দেশে বিরোধী দল বলতে আর কিছু থাকবে না। টাকাওয়ালা,ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গেছে বাংলাদেশের নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ। এখন আর আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের কোন মাঠের রাজনৈতিক ব্যক্তি নির্বাচন করে সংসদে যেতে পারবে না। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, অর্থ পাচারকারী বিত্তমান ছাড়া কোন সৎ রাজনীতিক কিংবা এই জেনারেশনের কোন সাধারণ ব্যক্তির পক্ষে নির্বাচনে জয়ী হওয়া অসম্ভব। তবে ভবিষ্যতে থার্ড জেনারেশন অথবা একটা ন্যায়পরায়ন সরকার যদি দেশের ক্ষমতায় আসে তবেই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব। নৌকার প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, তাকে হারাতে চাপ,ভয়ভীতি,টাকা এবং নির্বাচনের মাঠ দখলের ঘটনা ছিল। জোটের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা নৌকার প্রার্থী সাবেক তথ্যমন্ত্রী জাসদ সভাপতি হাসানুল ইনু বলেছেন,তিনি জনগণের ভোটে নয়,কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টির নেতা জি,এম,কাদের বলেছেন,নির্বাচন হয়েছে সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কে জিতবে আর কে জিতবে না। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সোবহান গোলাপ বলেছেন,অদৃশ্য শক্তির কারচুপি ছিল। অসীম কুমার উকিল বলেছেন,সাম্প্রদায়িক উসকানি ও টাকার কারণে তিনি পরাজিত। এডভোকেট সানজিদা খানম বলেছেন, ভোট ডাকাতির কারণে হেরেছি। নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত ৪২জন প্রার্থীর সকলে বলছেন, নির্বাচনে কারচুপি করে তাদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। হুইপ সামশুল হকসহ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত সংসদ সদস্যরা যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন তারা সকলে দাবী করছেন ভয়ভীতি প্রদর্শন,কেন্দ্র দখলসহ বিভিন্ন অনিয়ম করে তাদের পরাজিত করা হয়েছে। নির্বাচন বিরোধী আন্দোলনে থাকা নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো দাবী করছে নির্বাচনে তারা জয়ী হয়েছে। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে যায়নি। নির্বাচন কমিশন যা দেখাচ্ছে তা ভুয়া ও জাল ভোট। নির্বাচন কমিশন দাবী করছে ৪১.৮% ভোটার ভোট প্রদান করেছেন। বিএনপিসহ সকল দলের অংশগ্রহনে ২০০৮ সালের সুষ্ঠু ও প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক নির্বাচনে ৮৭% ভোট পড়েছিল যাতে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ধারাবাহিকভাবে আজ পর্যন্ত ক্ষমতায় আছে। তাহলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়া প্রায় ৪৬% ভোটার নির্বাচন বর্জন করেছেন? যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য,ইউরোপীয় কমিশন,জাতিসংঘ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও পূর্বের দেশগুলো ভারত,রাশিয়া,চীন,পাকিস্তান, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ শেখ হাসিনাকে বিপুল ভোটে বিজয়ের জন্য ও টানা চতুর্থ বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছে। শেখ হাসিনা মোট পাঁচ বার প্রধানমন্ত্রী ও আট বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মহিলা হিসেবে বিশ্বরেকর্ড করলেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বিষয়ে স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিয়ে দেশেবিদেশে অনেকে প্রশ্ন তুললেও সংবিধানের বিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত ফলাফল আইনসম্মত ও নবগঠিত সরকারও সম্পূর্ণ বৈধ সরকার তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই। কারণ সংবিধানে কমপক্ষে কত শতাংশ ভোটারের ভোট দিতে হবে বা সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন করতে হবে মর্মে সুস্পষ্ট কিছু উল্লেখ নাই। পত্রিকায় ও বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত নির্বাচন নিয়ে পরস্পর বিরোধী মতামত প্রকাশ,আলোচনা ও সমালোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে দেশে গণতন্ত্র আছে,মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।

গ্রামের সাধারণ মানুষও ডিজিটাল বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জের চা’র দোকানে বসে ডিস-লাইনের টিভিতে খবর,টক-শো ইত্যাদি দেখেশুনে অনেক সচেতন হয়েছেন । তারা অনেক কিছু বুঝেন এবং এখন নিজস্ব মতামত প্রকাশ করছেন যদিও তা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় না। তারা ট্রেনে,গাড়ীতে অগ্নি সংযোগ করে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা ও অন্দোলনের নামে পিঠিয়ে,গুলি করে মানুষ হত্যা করা মোটেও সমর্থন করেন না। তারা দুই বড় রাজনৈতিক দলের ক্ষমতার লড়াই এ নিরীহ মানুষের মৃত্যুর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের অদক্ষতা,অযোগ্যতা ও ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন। ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে শত শত মামলা,হামলা,দমননীতি ও জেলজুলুমের পর দেশে এখনও অসংখ্য আওয়ামী লীগ বিরোধী ও বিএনপির ভোটার আছেন। তারা এখন বিএনপির হাইকমার্ন্ড বা নেতৃত্বকে দোষারোপ করছেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের জন্য। যদি তাদের এভাবে ভোটে অংশগ্রহন করতে, ভোট দিতে নিষেধ করা হয় তাহলে তো তারা ভোট দেওয়াই ভুলে যাবেন। তারা সরাসরি বিএনপি নেতৃত্বকে অভিযুক্ত করে বলা শুরু করেছেন রাজনৈতিক আনুগত্যের সুযোগ নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বই তাদের ভোটাধিকার হরণ করেছেন নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করার নির্দেশ দেওয়ার মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ তো সব নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যেতে অনুরোধ করেছেন। দেশে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীরা কথিত হাইকমার্ন্ডের নির্দেশে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন,জেলজুলুম নির্যাতন মাথা পেতে নিয়েছেন। তবে ফরাজনীতির কৌশলের যুদ্ধে বার বার শেখ হাসিনা জয়ী হলেও বিএনপির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী লন্ডনপ্রবাসী হাইকমার্ন্ড সঠিক নেতৃত্ব দানে বার বার ব্যর্থ তারেক জিয়ার পদত্যাগ কামনা করছেন গ্রামগঞ্জের অনেক বিরক্ত,হতাশ বিএনপির সমর্থকরা। কোন দলেই গণতন্ত্র নেই। সাধারণ কর্মী সমর্থকদের চাওয়া-পাওয়ার কোন মূল্যায়ন নেই। সব দলেই চলছে পারিবারিকতন্ত্র। রাজনৈতিক দলগুলো যেন পারিবারিক প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী। আর কর্মী সমর্থকরা কোম্পানীর বাধ্যগত কর্মকর্তা-কর্মচারী।
নবগঠিত সরকারের কাছে দেশবাসীর আবেদন শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার অভুতপূর্ব উন্নয়ন খেয়ে মানুষ বাচঁতে পারে না। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য অবিলম্বে কমানোর ব্যবস্থা করা হউক। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী সিন্ডিকেট নেতা ও ব্যবসায়ী নেতারা। প্রত্যেক ব্যবসায়ী ব্যবসা শুরু করেন মুনাফা অর্জনের জন্য,লোকসান দেওয়ার জন্য নয়। সুযোগ পেলে তো মুনাফা অর্জন করবেনই। বাংলাদেশে এমন কোন ব্যবসা নেই যাতে পাঁচ বছরে বিনিয়োগের শত শত গুণ বেশী মুনাফা করা যায়। হলফনামা থেকে প্রতীয়মান হয় বাংলাদেশের রাজনীতিতে তা হয়েছে। তাই বড় ব্যবসায়ীরা,কর্পোরেট হাউসের শরীকদাররা, ব্যবসায়ী নেতারা রাজনীতিতেই বিনিয়োগ করছেন বেশী। ১৯৯ জন নবনির্বাচিত কোটিপতি ব্যবসায়ী নেতাদের সদিচ্ছা থাকলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা তাদের জন্য কঠিন কাজ নয়। আগামী রমজানে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে তারা সমালোচনার উত্তর দিতে পারেন যে তারা জনসেবার জন্য রাজনীতিতে এসেছেন, শুধু লাভের জন্য নয়। শুধু কথায় নয় প্রকৃতপক্ষে সর্বক্ষেত্রে বিস্তার লাভ করা দুর্নীতি দমন করতেই হবে। অবিলম্বে শর্ষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ভুত তাড়াতে হবে।

লেখক : একাধিক গ্রন্থের প্রণেতা, সাবেক পিপি ও সাবেক সভাপতি, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888